চায়ের দেশ সিলেটের শ্রীমঙ্গল ও চট্টগ্রামের পর দেশের তৃতীয় চা অঞ্চল হিসেবে এরই মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে পঞ্চগড়। চা চাষের পরিধি বৃদ্ধি এবং উৎপাদনেও নতুন রেকর্ড গড়ছেন পঞ্চগড়ের চা বাগান মালিক ও ক্ষুদ্র চা চাষিরা। গত চা মৌসুমের মত এবারও (২০২১ উৎপাদন মৌসুম) পঞ্চগড়ে রেকর্ড পরিমাণে চা উৎপাদিত হয়েছে। স্থানীয় চা বাগান মালিক ও ক্ষুদ্র চা চাষিদের উৎপাদিত কাঁচা চা পাতার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা গেলে এ জেলায় চায়ের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে বলে দাবি সংশ্নিষ্টদের।
পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ড সূত্র জানায়, গত চা উৎপাদন মৌসুমে (২০২০) ১১ দশমিক ৩ মিলিয়ন কেজি (এক কোটি তিন লাখ কেজি) তৈরি চা (মেইড টি) উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের দ্বিতীয় চা অঞ্চল চট্টগ্রামকে ছাড়িয়ে যায় পঞ্চগড়।
চলতি উৎপাদন মৌসুমে (২০২১) পঞ্চগড়সহ ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর ও নীলফামারীর সমতলের কিছু অংশে ব্যাপক হারে চা উৎপাদন হয়। এ অঞ্চলে ৯টি চা বাগান ও আট হাজারের বেশি ক্ষুদ্রায়তন চা বাগানের ১১ হাজার ৪৩৩ দশমিক ৯৪ একর জমিতে সাত কোটি ৩৫ লাখ ৬৮ হাজার কেজি সবুজ চা পাতা উৎপাদন করা হয়। এবার মোট ২২টি কারখানায় ১৪ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন কেজি (এক কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার কেজি) চা উৎপাদনের মাধ্যমে নতুন রেকর্ড করা হয়, যা গত উৎপাদনের তুলনায় তিন দশমিক ২৪ মিলিয়ন কেজি (৪২ লাখ ৪০ হাজার কেজি) বেশি।
জেলা সদরের ধাক্কামারা এলাকার ক্ষুদ্র চা চাষি কুদরত ই খোদা মুন বলেন, পঞ্চগড় জেলা যেহেতু এখন দেশের তৃতীয় চা অঞ্চল, এ জন্য এখানে একটি চা নিলাম কেন্দ্র স্থাপন করা প্রয়োজন। এই নিলাম কেন্দ্র হলে এখানকার উৎপাদিত চা চট্টগ্রাম ও শ্রীমঙ্গল চা নিলাম কেন্দ্রে বিক্রির জন্য বাড়তি পরিবহন খরচ গুনতে হবে না। কারখানা মালিকদের পরিবহন খরচ কমলে চায়ের কাঁচা পাতার ন্যায্যমূল্য পাবেন চা বাগান মালিক ও ক্ষুদ্র চা চাষিরা।
পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শামীম আল মামুন বলেন, উত্তরাঞ্চলে সমতল ভূমিতে চা উৎপাদনের দিক দিয়ে গত বছরের রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড করেছে। গত মৌসুমের চেয়ে ৪২ লাখ কেজিরও বেশি চা উৎপাদিত হয়েছে এবার, যা দেশের উত্তরাঞ্চলে নতুন এক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।